চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বিএনপি’র যুগ্ন মহাসচিব হারুনুর রশীদের নামে কোনরকম সরকারি টেন্ডার ছাড়াই অবৈধভাবে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের রাস্তার ধারের গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের আতাহার দক্ষিণ শহরে ওদুদ পার্কের সামনের রাস্তার অন্তত অর্ধশতাধিক মেহগনি, সেগুন গাছ কেটে নেয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে ৮টি কাটা গাছ ফেলে পালিয়া যায় শ্রমিকরা।
এসময় সদর থানার এসআই আব্দুস সালামের নেতৃত্বে গাছগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের নির্দেশেই বিএনপি নেতা মো. তাসেম আলী, মজিবুর, বুলবুল ও আসমাউল ১৫-২০ দিন ধরে রাস্তার দুই ধারের এসব গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ বাধা দিতে গেলে তারা বলছে, এগুলো হারুন এমপির গাছ, তাই তার নির্দেশেই কাটা হচ্ছে।
রবিবার দুপুরেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শামশুল আরেফিন জানান, আমাদের অজান্তেই যে ৫০-৬০টি গাছ কাটা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। গাছগুলো বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কোন টেন্ডার ছাড়াই কাটা হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল আওয়াল বলেন, যে গাছগুলো কাটা হচ্ছে, তা রাস্তার। ক্ষমতার অপব্যবহার করে এমপি হারুন তার লোকজন দিয়ে এগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
পঞ্চাশোর্ধ নুরুল ইসলাম জানান, এর আগেও রাস্তার ধারের ২৫টি গাছ কেটে নিয়ে গেছে বিএনপি নেতা ও গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. তাসেম আলী। এসব অবৈধ কাজ করার জন্যই কি আমরা তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছি? এলাকার মানুষ হিসেবে আমরা এর প্রতিবাদ করতেও পারিনা। আমরা চাই, যারা সরকারি এসব সম্পদ অবৈধভাবে দখল করছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রবিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ জানান, আমি এমপি থাকা অবস্থায় আমার নিজস্ব জমির সীমানায় এসব গাছ লাগিয়েছি এবং স্বাভাবিকভাবেই আমার লোকজন দিয়ে কেটে নিচ্ছি। এতে কোন সাহসে না জেনে, না বুঝেই বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ কেন বাধা দিলো এবং গাছগুলো জব্দ করলো তা আমিও বুঝতে পারছি না।
তাদের সাথে কথা বলেছি ও সোমবারের মধ্যে রাস্তার সীমানা নির্ধারন করার জন্য বলেছি। মানুষ বললেই তো আর সেগুলো রাস্তার গাছ হয়ে যাবে না! প্রয়োজনে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও এবিষয়ে জনগণের অভিযোগের কারনে নিউজ করলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেও মামলা করার কথা বলেন এমপি হারুন। এসময় তিনি ক্যামেরার সামনে কোন বক্তব্য দিবেন না বলেও জানান।
এব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, কোন অনুমতি ছাড়াই যারা সরকারি গাছ কেটেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।